কাদারিয়া
ইসলাম বিষয়ক ধারাবাহিক রচনার একটি অংশ আকীদা |
---|
১ আহমাদিয়া, কুতুববাদ ও ওয়াহাবিবাদ সহ ২ আলাওয়ি, আসাসিন ও দ্রুজ সহ ৩ আলেভি, বাক্তাশি, কিযিবাশ ও কালান্দারিয়া সহ ৪ আযারিকা, আজারদি, হারুবিয়া, নাজদাত এবং সুফ্রিয়া সহ ইসলাম প্রবেশদ্বার |
মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণকারী হিসেবে ইসলামে কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। তাঁদের কাদারিয়া বলা হয় কারণ তাঁরা এই মত পোষণ করেন মানুষের কাজ করার 'কাদর' বা শক্তি আছে।[১][২] এই মতবাদের প্রবক্তারা মানুষের ইচ্ছা বা কর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কাদারিয়াদের মতে, আল্লাহ বা বিধাতা কাজের জন্য সরাসরি দায়ী হতে পারেন না, কারণ কাজ ভালো বা মন্দ উভয়ই হতে পারে। মানুষ তার নিজের কাজের মালিক কিন্তু তার কাজ করার ক্ষমতা বিধাতা কর্তৃক প্রদত্ত। এই অর্থে বিধাতা চূড়ান্তভাবে কাজের কর্তা বা মালিক। কোনো বহিঃশক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে মানুষ তার নিজের কাজের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে তার নিজস্ব শক্তি আছে।[৩] এই সম্প্রদায়ের কেউ কেউ দাবি করেন যে মানুষের কাছে কিছু ঐশী ক্ষমতা হস্তান্তর বা অর্পণ করা হয়েছে এবং মানুষের যেটা সঠিক এবং যেটা ভুল তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিঃশর্ত বিবেচনামূলক ক্ষমতা আছে।[৪] তাদের কিছু মতবাদ পরে মু'তাজিলিদের দ্বারা গৃহীত হয় এবং আশআরিয়দের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়।[৩]
কাদারিয়া ইসলামের প্রথমদিকে দার্শনিক ধর্মতত্ত্বের একটি। এই আন্দোলন নিয়ে পাওয়া প্রাচীনতম দলিল হচ্ছে হাসান আল-বসরির রিসালা, যা ৭৫/৬৯৪ থেকে ৮০/৬৯৯ এর মধ্যে লেখা হয়। অবশ্য ইসলামে মুক্ত ইচ্ছা নিয়ে বিতর্ক এই লেখার পূর্বে পাওয়া যায়।
সুন্নি সূত্র মতে, জরাথুস্ট্রবাদের সাথে তুলনা দিয়ে মুহাম্মদ নিজেই এর নিন্দা জানিয়েছেন।[৫] সুনান আবু দাউদে বর্ণিত হয়েছে: "আব্দুল্লাহ ইবনে উমর: নবী বলেন, "কাদারিয়াহ হল এই সম্প্রদায়ের মাজিয়ান। যদি তারা অসুস্থ হয়, তবে তাদের কাছে যাবেন না, আর যদি তারা মারা যায় তবে তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যাবেন না।"
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ জে. এম কাওয়ান (সম্পাদক) (১৯৭৬)। The Hans Wehr Dictionary of Modern Written Arabic। উইসবাডেন, জার্মানি: স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিসেস। আইএসবিএন ০-৮৭৯৫০-০০১-৮
- ↑ Qadariyah, Britannica.com
- ↑ ক খ জন এল. এসপোসিতো, সম্পাদক (২০১৪)। "Qadariyyah"। দ্য অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ইসলাম। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস।
- ↑ নজরুল ইসলাম মজুমদার (১০ জুন ২০১১)। "মুর্জিয়া, কাদারিয়া, জাবারিয়া এবং সিফাতিয়া"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ সাচিকো মুরাতা, উইলিয়াম চিটিক (১৯৯৪)। "৬"। The vision of Islam (চিত্রিত সংস্করণ)। প্যারাগন হাউস। পৃষ্ঠা ২৫৮। আইএসবিএন 9781557785169।