“তারা মায়াকান্না করছে, গায়েবানা জানাজা, কতকিছু করছে। আরে জানাজা করতে হলে তো আমাদের এই পুলিশ বাহিনী করবে।”
Published : 23 Jul 2024, 10:05 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা সামাল দিতে গিয়ে পুলিশের তিন এবং একজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন।
এসময়ে আহত হয়েছেন এক হাজার ১১৭ জন পুলিশ সদস্য, যাদের মধ্যে ১৩২ জনের আঘাত গুরুতর। আহত তিনজনকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের সোমবার রাতে দেখার পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, যারা আহত বা নিহত হয়েছেন তাদের সবার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ‘সন্ত্রাসীদের’ মূল লক্ষ্য ছিল পুলিশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা বলে আসছি এই আন্দোলনের পেছনে কিছু উসকানিদাতা রয়েছে। তারা তাদের নিজস্ব উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং করবে। আমরা যেটা আশঙ্কা করছিলাম সেটাই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আমরা দেখেছি ছোট ছোট ছাত্রদের সামনে এনে পেছনে এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড, ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা। ছাত্ররা কোনোদিন এসব কাজ করতে পারে না।
“ছাত্ররা তাদের যে দাবি তুলে ধরেছিল সেগুলো নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো অবশ্যই কনসিডার করা হবে। তারপরেও কেন এই হত্যাকাণ্ড, কেন এই সন্ত্রাস, কেন এই ধ্বংস, কেন এই সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করা হল, এটা আজকে দেশবাসীর কাছ থেকে প্রশ্ন এসেছে।”
তিনি বলেন, “আমাদের পুলিশ মারা গেল তিন জন, ছাত্রলীগের আমার জানামতে ২-৩ জন শাহাদাৎ বরণ করেছে, আমার এলাকারই দুজন। সম্পূর্ণ পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। আর তারা মায়াকান্না করছে, গায়েবানা জানাজা, কতকিছু করছে। আরে জানাজা করতে হলে তো আমাদের এই পুলিশ বাহিনী করবে।”
তিনি দেশবাসীর প্রতি এই হামলাকারীদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
হতাহত পুলিশ সদস্যদের পরিসংখ্যান তুলে ধরে কামাল বলেন, “এ পর্যন্ত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন ১ হাজার ১১৭ জন। এত পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ইতিহাস বোধ হয় এটাই প্রথম। গুরুতর আহত হয়েছেন ১৩২ জন পুলিশ। কারও হাত ভেঙেছে, কারও পা, কারও মাথায় অসংখ্য সেলাই। এগুলো যারা না দেখেছেন কতখানি পৈশাচিকভাবে তাদের আহত করা হয়েছে, বুঝতে পারবেন না। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপতালের আইসিইউতে আছেন আরও তিনজন।
“তিনজন পুলিশ এ পর্যন্ত মারা গেছেন। এদের একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর যিনি পিবিআইতে কাজ করতেন, আরেকজন নায়েক যিনি ডিএমপিতে চাকরি করতেন এবং একজন এসআই যিনি কাজ করতেন ট্যুরিস্ট পুলিশে। ট্যুরিস্ট পুলিশ তো এসবের মধ্যে ছিল না, তবুও তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যে্র সাথে তাদের পেশাদারীত্ব, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।”
“সরকারি সম্পদ বিনষ্ট যারা করেছেন, জননিরাপত্তা যারা বিঘ্নিত করেছেন, যারা নাশকতাকারী, তাদেরকে অবশ্যই আমরা বিচারের মুখোমুখি করব,” বলেন তিনি।
কারফিউ জারির ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।